চকরিয়ায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া:

আগামী ২০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের বহুল আলোচিত চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সহিংস হয়ে উঠছে নির্বাচনী পরিবেশ। নির্বাচনকে ঘিরে গত সোমবার বিকালে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর কর্মীদের উপর হামলা ও মারধর করেছে নাগরিক কমিটির ব্যানারের স্বতন্ত্র মেয়র ার্থী জিয়াবুল হকসহ তার কর্মীরা।

এঘটনায় নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়েরও করেছেন। এতে স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী জিয়াবুল হককে প্রধান আসামী করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

নৌকার প্রার্থী মেয়র আলমগীর চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, গতকাল সোমবার দুপুরে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রেইন কমিউনিটি সেন্টারে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আতাউল হক সবুজ চৌধুরী, রাজিব খান, রোপেচ খানসহ আরো অনেক কর্মী-সমর্থকরা। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুলের নেতৃত্বে তার কর্মীরা নৌকার কর্মীদের ঘিরে ধরে মারধর করেন। এমনকি জিয়াবুল হক অত্যাধুনিক লাঠি দিয়ে ইলেকট্রিক শখ দেয় এবং মারধর করেনৌকার কর্মী সবুজকে। এসময় তারা কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষণ করে চয়ে যায়। পরে আহত সবুজকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন নৌকার প্রার্থী মেয়র আলমগীর চৌধুরীসহ আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী জিয়াবুল হক বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈষান্বিত হয়ে নৌকার প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। তিনি নির্বাচনে ভরাডুবি হবে বুঝতে পেরে এসব তালবাহানা শুরু করেছেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীর কয়েকজন নেতা-কর্মীর উপর হামলা হয়েছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠায়।

এ ঘটনায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জিয়াবুল হককে প্রধান করে আরো ১৬-১৭জনের নাম উল্লেখ করে নৌকার প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী একটি এজাহার দেয়। পরে এটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হয়েছে। নির্বাচনী পরিবেশ যাতে সহিংসতায় রুপ না পায় সেজন্য মামলার আসামীসহ বেআইনী অস্ত্র ধারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, কেউ যদি নির্বাচেনর সুষ্ঠ পরিবেশকে অশান্ত করতে চাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে দুই দফা স্থগিত হয় চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন। চলতি বছরের ১১ এপ্রিল প্রথম পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশন। তবে করোনা মহামারির কারণে প্রথম দফার নির্বাচন স্থগিত করে ২১জুন দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়। পরে করোনা মহামারির কারণে সেটিও স্থগিত হয়ে যায়। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়।

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে চার মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীসহ মোট ৬৮ জন প্রার্থী অঙশ গ্রহণ করছেন। ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্টিতব্য নির্বাচনে ৪৮ হাজার ৭’শ ২৪জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৮’শ ৯৯ জন পুরুষ এবং ২২ হাজার ৮’শ ২৫জন মহিলা ভোটার ভোটাধীকার প্রয়োগ করবেন।